17.The Daily Prothom Alo-17-06-2013

ভোটের রাজনীতি আরও শক্তিশালী হলো
চার সিটিতে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন
| তারিখ: ১৭-০৬-২০১৩

1. সাম্প্রতিক কালে রাজনৈতিক সহিংসতা-Violence মানুষকে যতটা শঙ্কিত করে তুলেছিল, তার চেয়ে বেশি আশাবাদী করে তুলেছে চার সিটি করপোরেশনে শান্তিপূর্ণ নির্বাচন।

2. মানুষ অবাধে তাঁদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করেছেন এবং তাঁদের প্রত্যাশিত প্রার্থীদের জিতিয়ে এনেছেন।

3. নির্বাচন নিয়ে প্রধান বিরোধী দল বিএনপির দ্বিধাদ্বন্দ্ব-Hesitation ও সন্দেহ দূর হলো।

4. চার সিটি করপোরেশনেই তাদের সমর্থিত প্রার্থী বিপুল ভোটে জয়লাভ করেছেন।

5. নির্বাচনের পর সবখানে শান্তিপূর্ণ পরিবেশ বিরাজ করায় বোঝা যায় ক্ষমতাসীন দলও নির্দ্বিধায় ভোটের রায় মেনে নিয়েছে।

6. ফল প্রকাশের পর বিরোধীদলীয় নেতা খালেদা জিয়া দলীয় নেতা-কর্মীদের তাৎক্ষণিকভাবে বিজয় মিছিল-Victory rally বের না করার আহ্বান জানিয়ে রাজনৈতিক প্রজ্ঞার-Political wisdom পরিচয় দিয়েছেন।

7. আমরা বিজয়ীদের অভিনন্দন জানাই।

8. সাধারণ নির্বাচনের পূর্বক্ষণে চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনে বিরোধী দল-সমর্থিত প্রার্থীদের এই বিজয় অত্যন্ত তাৎপর্যপূর্ণ।

9. প্রথমত, এটা বিরোধী দলকে মানুষের মনোভাব সম্পর্কে নিশ্চিত হতে সাহায্য করবে।

10. ক্ষমতাসীন দল-সমর্থিত প্রার্থীদের ভরাডুবি সত্ত্বেও দলীয় বা প্রশাসনিক হস্তক্ষেপ-Interference মুক্ত নির্বাচন যে হতে পারে, তা অনেকটাই পরিষ্কার হলো।

11. এই অভিজ্ঞতা বিরোধী দলকে আগামী সাধারণ নির্বাচনে অংশগ্রহণের পক্ষে সিদ্ধান্ত গ্রহণে সাহায্য করবে বলে ধারণা করা যায়।

12. রাজনৈতিক অস্থিরতার বিপরীতে এটা বড় প্রাপ্তি হিসেবে সমাদৃত-Appreciated  হবে।


13. নির্বাচন কমিশন নিরপেক্ষভাবেই কাজ করেছে।

14. বিভিন্ন সময় বিরোধী দল-সমর্থিত প্রার্থীদের যুক্তিগ্রাহ্য-Logical অভিযোগের বিষয়ে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ নিয়ে সবাইকে আশ্বস্ত-Assure/ console করতে পেরেছে বলেই তাদের পক্ষে সব প্রার্থী ও ভোটারদের আস্থা-confidence/ trust অর্জন সম্ভব হয়েছে।

15. নির্বাচন কমিশনের জন্যও এটা বড় অর্জন।

16. কারণ, তাদের প্রতি বিরোধী দলের সংশয়-Suspicion/ doubt ছিল।

17. চার সিটি করপোরেশন নির্বাচনের ফলাফল সেই সংশয় দূর করতে সাহায্য করবে।

18. সিটি করপোরেশন ও জাতীয় নির্বাচন এক নয়।

19. তবে নির্বাচন অনুষ্ঠান-প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা ও নিরপেক্ষতার বিষয়গুলো দুই নির্বাচনে একই মাপকাঠিতে বিচার্য।

20. সেই দিক থেকে বলা যায়, আগামী সাধারণ নির্বাচনের আগে নির্বাচন কমিশনের একটি বড় অনুশীলন হয়ে গেল।


ভুলত্রুটি কিছু হয়ে থাকলে তা শোধরানোর কর্তব্য কমিশনের।
এই নির্বাচনে ভোটারদের একদিকে যেমন জাতীয় রাজনৈতিক দৃষ্টিভঙ্গি ছিল, তেমনি স্থানীয় সমস্যার সমাধানে কোন প্রার্থী কতটা অবদান রেখেছেন বা ভবিষ্যতে রাখতে পারেন, সে বিবেচনাও ছিল। সিলেট বা রাজশাহীতে হয়তো এই বিবেচনা প্রাধান্য পেয়েছে। আবার খুলনা ও বরিশালে হয়তো প্রাধান্য পেয়েছে রাজনৈতিক বিবেচনা। তাই জাতীয় বা স্থানীয় নির্বাচন, আসল কথা হলো, জনগণের স্বার্থে কাজ না করলে ভোট পাওয়া যাবে না।
প্রতি পাঁচ বছর পর জনগণের কাছে ভোটের জন্য ফিরে আসতে হবে। মানুষ ভোট না দিলে ক্ষমতায় যাওয়া বা ক্ষমতা ধরে রাখা যে সম্ভব নয়, প্রধান রাজনৈতিক দলগুলোর মধ্যে এই উপলব্ধি ঘটানোর যথেষ্ট উপাদান সিটি করপোরেশন নির্বাচন দিয়ে গেছে। জাতীয় নেতারা এগুলো কতটা কাজে লাগাতে পারেন, তার ওপর নির্ভর করছে দেশের রাজনৈতিক ভবিষ্যৎ।